রবিবার (১৩ জুন) ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ধর্ষণ এবং হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চান পরীমণি। এ বিষয়ে জানতে তাঁকে ফোন করা হলে তিনি কেঁদে ফেলেন। কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানতে চাইলে বলেন, ফোনে বলবেন না। সরাসরি জানাবেন।
এরপর রাত ১০টার দিকে বনানীর বাসায় ডেকে সাংবাদিকদের জানান, ঘটনা চারদিন আগের। রাত ১২টার দিকে জিমি নামে একজন একটি প্রজেক্টের বিষয়ে আলোচনার কথা বলে পরীমণিকে ডেকে নেন। জিমি পারিবারিকভাবে তাঁর পূর্বপরিচিত। এই সময় তাঁর সংগে আরেকটি মেয়েও ছিলেন।
পরী জানান, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরা বোটক্লাবে। সেখানে গিয়ে ভেতরে ঢুকতে অস্বীকার করেন তাঁরা। কিন্তু একরকম জোর করে তাদের ভেতরে নেয়া হয়। সেখানে ঢোকার পর তাঁরা ওয়াশরুমে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে মদ্যপ অবস্থায় পাঁচজন লোককে দেখতে পান। তাদের সংগে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। একজনের নাম বলা হয় নাসির উদ্দিন। তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় বোটক্লাবের চেয়ারম্যান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের বন্ধু বলে।
পরী অভিযোগ করেন, সেখানে তারা তাঁদের সংগে মদ পান করতে বলেন। কিন্তু মদ পান করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এক পর্যায়ে কফি পানের কথা বললে তাঁরা রাজি হন। এসময় পরীর সংগে থাকা মেয়েটি কাপে মুখ দিয়ে জানান, সেটি কফি নয়, অন্য কিছু। এটা জেনে পরী তা খেতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় তাঁদের মারধর করা হয় এবং শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়।
তিনি বলেন, তারা লাইট এবং টেলিভিশন বন্ধ করে দিতে বলে। একজন বলে, মাধুরীর মতো নাচবি এখন। এই বলে তিনি, ‘কাজরারে কাজরারে’ গানের সংগে এক লোক নাচতে শুরু করে। পরী জানান, এক পর্যায়ে বেহুশ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর কিছুটা চেতনা ফিরলে তাঁকে ক্লাবের কর্মীরা ধরে গাড়িতে তুলে দেন।
পরী বলেন, চেতনা ফিরলে আমি শুধু দেখছিলাম আমার কাপড় ঠিক আছে কি না। তিনি জানান, ৯৯৯ এ কল দিলে বনানী থানা থেকে পুলিশ যায়। তাঁকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীর দাবি, সেখানে পুলিশ তাঁকে রেখে চলে যাওয়ার সময় তিনি জিজ্ঞাসা করেন, আপনারা আমার বক্তব্য লিখলেন না? তখন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা সবকিছু লিখেছি।
যদিও সাংবাদিকদের সামনে পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেননি পরী। তিনি জানান, ঘটনার পর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন জায়গায় তিনি গেছেন। কিন্তু কোনো সুরাহা পাননি। ফলে ফেসবুকে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন তিনি। ওই স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চান পরীমণি।
এদিকে পরীমণির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ চক্রবর্তী বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, তিনি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন যে তাঁকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা হুমকি দিচ্ছে সে বিষয়ে তিনি কিছুই লিখেননি। আবার আমাদের কাছেও আসেননি। যেহেতু তিনি বনানী এলাকায় থাকেন তাই তিনি তো ওসির সংগেও দেখা করে অভিযোগ করতে পারতেন কিংবা আমার কাছেও আসতে পারতেন অভিযোগ নিয়ে। কিন্তু আসেননি। অভিযোগ নিয়ে না এলে আমরা কি করতে পারি? তবুও বিষয়টি আমরা দেখছি।
সংবাদচিত্র/বিনোদন/আর.কে