ইসরাইলি একটি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্মার্টফোনে আড়িপাতার বড় একটি ঘটনা ফাঁস হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানসহ ১৭টি সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণে ভয়াবহ এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
৫০ হাজারের বেশি ফোন নম্বরের একটি তালিকা ফাঁস হয়েছে। রবিবার (১৮ জুলাই) এই তালিকা ফাঁস হতে শুরু করে। প্রথমে তালিকায় ১৮০ জনের বেশি সাংবাদিকের নম্বর থাকার কথা জানা যায়। যাদের মধ্যে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস, ফ্রান্স ২৪, ইকোনমিস্ট, এপি ও রয়টার্স-এর প্রতিবেদক, সম্পাদক ও নির্বাহীরাও রয়েছেন।
এই হ্যাকিংয়ের তালিকায় ভারতের অন্তত ৩০০ রাজনীতিক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, বিজ্ঞানীর নাম থাকার কথা জানিয়েছে নিউজ পোর্টাল দ্য অয়্যার। সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী, এমনকি কোনো কোনো দেশের ক্ষমতাসীন পরিবারের সদস্যদের ওপরও আড়িপাতা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৬ সাল থেকে ইসরাইলি কোম্পানি এনএসও’র গ্রাহকেরা এসব নম্বরে আড়ি পেতেছে।
ইসরাইলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপের তৈরি করা সফটওয়্যার ‘পেগাসাস’ ব্যবহার করে এই আড়িপাতার ঘটনা ঘটেছে। পেগাসাস হলো একটি ম্যালওয়্যার (বিশেষ ধরনের ভাইরাস)। এর মাধ্যমে আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সব মেসেজ, ছবি, ই-মেইল, কল রেকর্ড বের করা যায়। এই ম্যালওয়্যার ফোন ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতেই মাইক্রোফোন চালু করে দেয়।
ফাঁস হওয়া একটি ডেটাবেসে ফোন নম্বরগুলো প্রথম পায় প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। পরে তারা গার্ডিয়ান, দ্য অয়্যারসহ ১৬টি সংবাদমাধ্যমকে জানায়। এই অনুসন্ধানের নাম দেয়া হয়েছে ‘পেগাসাস প্রজেক্ট’।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাইবার সিকিউরিটি ল্যাব পরিচালনাকারী ক্লডিও গার্নিয়েরি গার্ডিয়ানকে বলেন, একবার কোনো ফোনে (স্মার্টফোন) পেগাসাস সফটওয়্যার ঢুকে গেলে এনএসও’র গ্রাহক পুরো ফোনটির দখল পেয়ে যায়। ফোনের মালিকের মেসেজ, কল, ছবি, ই-মেইল সবই দেখতে পাবে, গোপনে ক্যামেরা কিংবা মাইক্রোফোন চালু করতে পারবে। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, সিগন্যালের মতো এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপের বার্তাগুলোও পড়তে পারবে।
সংবাদচিত্র/আন্তর্জাতিক