আমাদের দেশের বিশিষ্ট বেতার, টেলিভিশন, মঞ্চ ও চলচ্চিত্রাভিনেত্রী দিলারা জামানের জন্মদিন আজ। সংবাদচিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
দিলারা জামান লিলি ১৯৪২ সালের ১৯ শে জুন ভারতের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করলেও তার পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। জন্মের কিছুদিন পর তিনি আসানসোলে চলে আসেন বাবার বদলির কারণে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরপরেই বাবা যশোরে বদলি হয়ে আসেন।
বাবা রফিকউদ্দিন আহমেদ ছিলেন পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। যশোর মোমেনা গার্ডেন স্কুলে লেখাপড়া করেন তিনি।
১৯৫৪ সালে বাবা বদলি হয়ে ঢাকা আসেন। ১৯৫৮ সালে বাংলাবাজার গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ইডেন কলেজে ভর্তি হন দিশারা জামান।
বাংলাবাজার সরকারি বালিকা বিদ্যালয়প লেখাপড়ার সময় তিনি মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন। ইডেন কলেজে পড়া অবস্থায় তিনি মঞ্চ নাটক করতেন।
ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ ভর্তি হন। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক, সাহিত্যিক অনুবাদক ফখরুজ্জামান চৌধুরীকে ১৯৬৪ সালে বিয়ে করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করার সময় ডাকসুর নাটক মুনীর চৌধুরীর নির্দেশনায়, ডক্টর আলাউদ্দিন আল আজাদের লেখা মায়াবী প্রহর নাটকে অভিনয় করেন।
মাঝে কিছুদিন তিনি চট্টগ্রামে অরিন্দম নাট্যগোষ্ঠীর সাথে যুক্ত ছিলেন এবং ঢাকায় এসে নাটক করতেন।
ইডেন কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা অবস্থায় তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। নাট্যচর্চার পাশাপাশি তিনি সাহিত্য চর্চা করতেন। বেশ কয়েকটি গল্পের বইও লেখেন দিশারা জামান। ১৯৬৬ সালে প্রথম টেলিভিশনে ত্রিধরা নাটকে অভিনয় করেন। এরপর তিনি সিরিজ নাটক করেন সকাল-সন্ধ্যায়।
মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র চাকাতে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। হুমায়ুন আহমেদ পরিচালিত আগুনের পরশমণি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন।
দিলারা জামান অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল চন্দ্রগ্রহণ, মনপুরা, বৃহননলা, হালদা, ব্যাচেলর, মেইড ইন বাংলাদেশ, গোর ও তুমি আসবে বলে।
২০০৮ সালে মুরাদ পারভেজ পরিচালিত চন্দ্রগ্রহণ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০০৮ সালে ঢাকা কালচারাল রিপোর্টার্স ইউনিটি অভিনয়শিল্পে অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে ‘ডিসিআরইউ শোবিজ অ্যাওয়ার্ড’ আজীবন সম্মাননা প্রদান করে।
দিলারা জামানের তানিয়া ও যুবায়রা নামে দুই কন্যা রয়েছেন। পেশায় তানিয়া ডাক্তার ও যুবায়রা একজন আইনজীবী। দিলারা জামান শাহীন স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। এক সময় তিনি মেয়েদের কাছে চলে যান আমেরিকায়। দুই বছর থাকার পর দেশের টানে পুনরায় তিনি ফিরে আসেন।
প্রথিতযশা এই শিল্পীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করছি।
সংবাদচিত্র/বিনোদন ডেস্ক/লুৎফর