আজ থেকে শুরু দেশজুড়ে ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এর আগের দিন দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে, আর আক্রান্ত আট হাজার ছাড়িয়েছে। এদিন নতুন ১১৫ জনের মৃত্যুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫০৩ জন। আর সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছেন আট হাজার ৮২২ জন, শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।
৭ দিনের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ। এতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিধি-নিষেধ কার্যকর করতে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা থেকে শুরু হচ্ছে এই লকডাউন। ৭ দিনের এই লকডাউনে কেউ বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে বের হলেই কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
গতবছরের মার্চ মাস থেকে দেশে করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকে যে কয়েক দফা বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছিল, সেগুলোর বেশিরভাগই নিয়ম মানা আর না মানার লুকোচুরির মধ্য দিয়ে কেটেছে। জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে অনেকে মেনেছে বিধিনিষেধ, অনেকে আবার জীবন-জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হয়ে এসেছিল। লকডাউনের পক্ষে-বিপক্ষে বিরাট জনমত সেসময় থেকেই গড়ে উঠতে থাকে। দিনমজুর থেকে শুরু করে স্বল্পআয়ের মানুষের কষ্ট সবাইকে ব্যথিত করেছে। সরকারও পরিস্থিতি উন্নতির সাথে সাথে শিথিল করে আসছিল যথানিয়মে, কিন্তু সম্প্রতি সংক্রমণ আবারও বাড়ায় বেছে নিতে হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধের পথ।
প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের সর্বস্তর থেকে এবারের বিধিনিষেধ মানতে ও কার্যকর করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জেল-জরিমানার সতর্কতাও আসছে লকডাউনকে ঘিরে। ভ্যাকসিন নিয়ে তৈরি হওয়া সঙ্কট ও সংক্রমণ-মৃত্যু বেড়ে যাবার এই সময় কঠোর হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। কিছুটা কষ্ট করে হলেও বিধিনিষেধ মেনে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত জরুরি।
ইতিবাচক খবর হচ্ছে, আজ বৃহস্পতিবার ১ জুলাই থেকে আবারও গণভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়েছে জোরেশোরে। ভারত থেকে ভ্যাকসিন না পাওয়া গেলেও চীন ও রাশিয়া থেকে আসছে ভ্যাকসিন। আমাদের আশাবাদ, কিছুদিনের কঠোর বিধিনিষেধ মেনে ও ভ্যাকসিন কার্যক্রমের মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে। আর এই সময়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকার ও সমাজের অবস্থাপন্ন মানুষরা এগিয়ে এলে পরিস্থিতি মোকাবেলা সহজ হবে।
সংবাদচিত্র/সম্পাদকীয়/আর.কে